মহামানব গৌতম বুদ্ধের অহিংসা বানী অত্র এলাকার মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে গোয়াইনছড়ি জনকল্যাণ বৌদ্ধবিহার একটি ঐতিহ্যবাহী আদর্শিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৬৯ সালে তদকালীন পূর্ব পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর ভিক্ষু চন্দ্র বংশের সময় কালে এর সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন অনগ্রসর কুসংস্কার পূর্ণ সমাজে এই প্রতিষ্ঠানটি নানা ভাবে অত্র এলাকার মানুষের মনে শিক্ষা ও ধর্মীয় অনুভূতি জাগরনে দারুন প্রভাব ফেলে। যার ফলাফল স্বরুপ দেখা যায় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যান্য জায়গায় নানা সংঘাট ও রক্তপাত দেখা দিলে ও এখানে তা দেখা যায় নি বলা যায় দক্ষিণ রাঙ্গামাটির মধ্যে বিলাইছড়ি উপজেলার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এলাকা এটি যার প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, এই বৌদ্ধ বিহারটি সমাজকে স্থিতিশীল ও শান্তি বজায় রাখতে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এখানে প্রথম থেকে বৌদ্ধদের নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান খুব সুচারুরূপে পালন হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বৌদ্ধদের সবচেয়ে বড় দানোৎসব কঠিন চীবর দান সাধ্যমত প্রায় প্রতি বছর পালন হয়ে আসছে। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন ও উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ছুটে আছে। কারণ এটি শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বলা যায় এটি একটি মিলন মেলা। বিশেষ করে এখানকার বেশীর ভাগ মানুষ জুমচাষী এবং জুমচাষ করতে গিয়ে তারা নানা প্রান্তে অবস্থান করে। বছরের এই সময়তাকে তারা অন্তত একবার আত্মীয়-স্বজনের সাথে মিলিত হবার চেষ্টা করে। তাই, তাদের কাজকর্মও তারা সেভাবে পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখে।
বর্তমানে এই বৌদ্ধ বিহারের সাথে একটি অনাথ আশ্রমও রয়েছে। যেটি প্রথম ২০০২ সালে স্থাপিত হয় এবং ২০০৫ সালে সরকারি রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। এখন নিয়মিত ১৬ জন অনাথ শিশু পড়ালেখা করলেও সরকারিভাবে তাদের মাত্র ০৮ জনের নামে capitation grandরয়েছে। বর্তমান ধর্মীয় গুরু ভদন্ত ধর্মানন্দ ভিক্ষু এই অনাথ আশ্রম ও বিহারের ধর্মগুরু হিসেবে দায়িত্বে আছেন।এখান থেকে ধর্মীয় নীতির পাশাপাশি এলাকার সুবিধা বঞ্চিত অনাথ শিশুরা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
বুদ্ধের অহিংসা নীতি প্রচার ও প্রসারের জন্য এই বিহারটি এখনো একটি আদর্শিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। তাই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এটি এই ইউনিয়ন তথা বিলাইছড়ি উপজেলার সব মানুষের কাছে একটি শান্তির প্রতীক হয়ে দাড়িয়ে আছে। সার মর্মবানী হচ্ছে-"জগতের সকল প্রানী সুখী হউক"।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস